সুদানে বাজারে আধাসামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণ, নিহত ৫৪
সুদানের ওমদুরমান শহরের একটি বাজারে শনিবার দেশটির আধাসামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে ৫৪ জন নিহত হয়েছে। একটি চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রটি এএফপিকে আরো বলেছে, র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) হামলার পর আহতদের ‘এখনো হাসপাতালে আনা হচ্ছে’।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ নিয়মিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে, যা এক ভয়াবহ সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে।
এর ফলে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে এবং এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
হামলা থেকে বেঁচে ফেরা এক ব্যক্তি এএফপিকে বলেছেন, গোলাগুলো সবজি বাজারের মাঝখানে পড়েছিল, তাই এত বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে। এ ছাড়া আল-নাও হাসপাতালে এক স্বেচ্ছাসেবক এএফপিকে জানিয়েছেন, আহতদের পরিবহনের জন্য কাফন, রক্তদাতা ও স্ট্রেচারের ঘাটতি রয়েছে। হাসপাতালটি ওই এলাকায় থাকা শেষ মেডিক্যাল স্থাপনাগুলোর একটি এবং এটি বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছে।
এদিকে রাজধানীতে কয়েক মাস ধরে আপাত অচলাবস্থার পর সেনাবাহিনী এই মাসে খার্তুম সদর দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি আরএসএফকে তাদের অনেক শক্ত ঘাঁটি থেকে বিতাড়িত করে শহরের উপকণ্ঠে ক্রমবর্ধমানভাবে আক্রমণ করেছে। তবে হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানিয়েছেন, গোলাবর্ষণটি পশ্চিম ওমদুরমান থেকে করা হয়েছিল, যেখানে আরএসএফ এখনো নিয়ন্ত্রণ করছে।
এ হামলার এক দিন আগে আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলো সেনাবাহিনীর কাছ থেকে রাজধানী পুনরুদ্ধারের হুমকি দিয়েছেন।
তিনি সেনাদের উদ্দেশে একটি বিরল ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমরা তাদের (খার্তুম থেকে) আগে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম এবং আমরা আবারও তাদের তাড়িয়ে দেব।’
এএফপি জানিয়েছে, প্রথম গোলাবর্ষণ শুরু হওয়ার প্রায় ২২ মাস পর সুদানের রাজধানী খার্তুম তার আগের রূপ হারিয়ে ফেলেছে। দেশজুড়ে হাজারো মানুষের মধ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত রাজধানীতেই ২৬ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের একটি প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, কমপক্ষে ৩৬ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়ে চলে গেছে।
সম্পূর্ণ এলাকা ফাঁকা হয়ে গেছে এবং যোদ্ধারা দখল করেছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সুদানের সেনাবাহিনী প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্কুল, বাজার ও হাসপাতাল আক্রমণ এবং খাবারের অভাবকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করেছিল। এক সপ্তাহ পর ওয়াশিংটন সুদানের দারফুর অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগে আরএসএফের দাগলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যেখানে বাহিনীটির আধিপত্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, দাগলোর বাহিনী ‘জাতিগত নিধন’ সংঘটিত করেছে।