দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা বাফুফে সভাপতির
২৬ অক্টোবর সভাপতি নির্বাচিত হয়েই তাবিথ আউয়াল এএফসি অ্যাওয়ার্ড নাইটে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়া চলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে গতকাল সভাপতি হিসেবে প্রথম ফুটবল ফেডারেশনে তিনি পা রেখেছেন। তাবিথের সঙ্গে হাজির নির্বাচিত কমিটির সবাই। নির্বাচিত কমিটি অবশ্য এর মধ্যেই কাজ শুরু করেছে।
মেয়েরা সাফ জিতে আসার পর সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসানসহ অন্য কর্মকর্তারা চ্যাম্পিয়ন দলটিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে মালদ্বীপ ঢাকায় আসছে। সে সফরের প্রস্তুতিসংক্রান্ত কাজও তারা শুরু করেছেন। গতকাল একসঙ্গে পুরো কমিটি বাফুফেতে মিলিত হয়েছিল।
বাফুফের কর্মচারীদের সঙ্গেও নতুন করে পরিচিত হয়েছেন। ক্যাম্পে থাকা সাফজয়ী ফুটবলারদের সঙ্গেও এদিন আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ করেছেন তাঁরা। এরই মধ্যে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সাফজয়ী দলটিকে এক কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেও বাফুফে এখনো কোনো ঘোষণা দেয়নি। গতকাল তাবিথ জানিয়েছেন, আগামী ৯ নভেম্বর নির্বাহী কমিটির প্রথম সভাতেই মেয়েদের কী উপহার দেওয়া হবে, সবাই মিলে সেটি তাঁরা চূড়ান্ত করবেন।
গতকাল বাফুফের কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচিতিসভা শেষে এক সদস্য বেরিয়ে এসে জানান, দুর্নীতির ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন নতুন সভাপতি। গত বছর ফিফার নিষেধাজ্ঞা এবং সতর্কীকরণে মূলত বাফুফের বেতনভুক্ত কর্মীরা জড়িত ছিলেন। যদিও সভাশেষে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তাবিথ বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি, ‘আমরা অভ্যন্তরীণভাবে কী আলোচনা করি, এটি আমরা কখনোই প্রকাশ করব না। তবে এটি বলতে পারি, এখানে আমরা যাঁরাই আছি, তাঁরা প্রত্যেকেই জানি, ফিফা, এএফসির মান অনুযায়ী আমাদের নৈতিকতার বিষয়গুলো কী, আমাদের নীতি-মূল্যবোধ কী হবে এবং কী করলে আইনের ব্যতয় হতে পারে। আমি কখনোই চাইব না আমাদের কেউ সেই মানের নিচে নামুক বা কোনো আইন ভঙ্গ করুক।’
তাবিথ এর আগে কালের কণ্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফিফার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নিজের আক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন, ‘এটা সবচেয়ে দুঃখজনক যে আমাদের ভেতরের অনিয়ম আমাদের আগে ফিফা সেটা তদন্ত করে বের করেছে। আমার মেয়াদে আমি নিশ্চিতভাবেই সেটি হতে দিতে চাই না। যেকোনো অনিয়ম অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে নির্মূল করাই আমার লক্ষ্য থাকবে।’
দুর্নীতির বিরুদ্ধে নতুন সভাপতির অবস্থান তাই স্পষ্ট। আগামী দিনগুলোতে সেটি কার্যকর হতে দেখারই তাই অপেক্ষা থাকবে। ৯ নভেম্বরের সভা থেকেই নতুন কমিটি পুরোদমে কাজে নামতে যাচ্ছে। পেশাদার লিগ কমিটি, জাতীয় দল কমিটি, অর্থ কমিটি, ডেভেলপম্যান্ট কমিটি, নারী ফুটবল লিগ কমিটি—নতুন করে সেসবও গঠিত হবে। কে কোন দায়িত্ব পেতে পারেন, সেসব নিয়ে জল্পনা আছে। গত মেয়াদে পেশাদার লিগ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পাশাপাশি শেষদিকে এসে অর্থ কমিটিরও দায়িত্ব পালন করেছেন ইমরুল হাসান। এবার সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে নতুনভাবে যুক্ত হবেন তিনি ফুটবলের কর্মকাণ্ডে।
চারজন সহসভাপতিই এবার নতুন। নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, ওয়াহিদউদ্দিন চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ আরেফ ও ফাহাদ করিম প্রথমবারের মতো কাজ করবেন বাফুফেতে। গতকাল সবাইকে পাশে নিয়েই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাবিথ। যদিও কথা বলেছেন তাবিথ একা। দায়িত্ব বণ্টন হয়ে গেলে অন্যরাও নিশ্চয়ই সামনে চলে আসবেন।