img

প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিনিয়োগে কড়াকড়ি বজায় রাখবে ভারত। জানালেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যুক্তরাষ্ট্রের হোয়ারটন বিজনেস স্কুলে মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমি চোখ বন্ধ করে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নিতে পারি না। কোথা থেকে অর্থ আসছে, সেটা ভুলে গিয়ে বা খেয়াল না করে আমি বিনিয়োগের জন্য অর্থ নিতে পারি না।’

 

২০২০ সালে ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রতিবেশী দেশের কোনো কম্পানি যদি বিনিয়োগ করতে চায়, তাহলে নিরাপত্তা ছাড়পত্র নিতে হবে। ওই নির্দেশে বিশেষ কোনো দেশের নাম বলা হয়নি। তবে চীনের সঙ্গে বিরোধের জেরে ইলেকট্রিক গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর, কৃত্রিম মেধার মতো ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে আদান-প্রদান হয়নি। 

সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে চীনা কম্পানিগুলোর বিনিয়োগ থমকে গেছে।

 

বিশেষ করে গাড়ি তৈরির সংস্থা বিওয়াইডি ও গ্রেট ওয়াল মোটোর ভারতীয় কোনো সংস্থার সঙ্গে হাত মেলাতে পারেনি।

 

তবে অন্য পণ্যের ক্ষেত্রে ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘাতের পর চীন থেকে আমদানি ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। ফলে চীনের সঙ্গে ভারতের আমদানি-রপ্তানির মধ্যে অসাম্য বেড়েছে। চীনের তুলনায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল সাড়ে আট হাজার কোটি ডলার।

 

গত বছর চীন ছিল ভারতে পণ্য ও শিল্পদ্রব্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ।

 

টাকার রং
এদিকে সাবেক পরিকল্পনা কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমিতাভ রায় বলেছেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আসছে, চলেও যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে নির্মলা সীতারামন প্রতিবেশী দেশগুলোর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।’

পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যে বিনিয়োগ আনার জন্য মরিয়া হয়ে বলেছিলেন, তিনি টাকার কোনো রং দেখবেন না। তিনি বিনিয়োগ চান।

 

সে সময় টাকার রং নিয়ে একটা বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। তখন বিদেশি একটি সংস্থার কাছ থেকে বিনিয়োগ আসার কথা ছিল, যাদের বিরুদ্ধে কমিউনিস্টদের মারার চক্রান্তে শামিল হওয়ার অভিযোগ ছিল।

 

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা বলেছেন, ‘সীতারামন এর ঠিক উল্টো অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলছেন, নির্বিচারে সব বিনিয়োগ তারা নেবেন না। বিশেষ করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকি মনে হলে সেই বিনিয়োগে ভারত আগ্রহী নয়। এই অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো সম্ভাবনাই নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে কিছুটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তাই বলে নির্বিচারে সব বিনিয়োগ গ্রহণ করার পরিস্থিতি আগেও ছিল না, এখনো নেই। সেটাই সীতারামনের কথা থেকে স্পষ্ট।’

এই বিভাগের আরও খবর