img

বর্ষায় ব্যাগের যত্ন
 
যাপনের অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যাগ না হলে যেন চলেই না। অফিস, স্কুল, কলেজ, ভ্রমণ কিংবা যেকোন অনুষ্ঠান ব্যাগ তো চাই-ই চাই।  প্রয়োজনের ধরন অনুযায়ী পছন্দমত একটা ব্যাগ না হলে, টাকা বই খাতা পেন্সিল পানির বোতল,  রম্নমাল, লিপস্টিক কাজলের মত বিভিন্ন দরকারী টুকিটাকিই বা রাখা হবে কোথায়? আবার ব্যাগ হলেই তো আর হলো না। চাই তার সঠিক যত্নআত্তিও।


ঋতুভেদে গ্রীষ্ম ও বর্ষা যত্নের ধরনও যায় বদলে। গ্রীষ্মে কড়া রোদ বাতাসে ব্যাগের তেমন কিছু না হলেও বর্ষার স্যাঁতস্যাঁতে আর্দ্র বাতাস এবং বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেলে দৈনন্দিন ব্যবহারের ব্যাগগুলো হয়ে পড়ে নাজুক। প্রতিদিনের চেনা ব্যাগের রং, উপাদান, নকশায় পড়ে ড়্গতিকর প্রভাব। বর্ষায় রেক্সনি, পাট, চামড়া, কাপড়, বাঁশ, বেত, মেটালের ইত্যাদি উপাদান তৈরি ব্যাগগুলো ব্যবহারে হতে হবে সতর্ক।


কেমন করে? পাটের তৈরি ব্যাগের প্রতিষ্ঠান কালিন্দীর নির্বাহী পরিচালক মুনিয়া জামান বলেন, পাট, লেদার কিংবা রেক্সিন, সব ধরনরে ব্যাগই পানিতে ভিজলে নষ্ট হবে। ওয়াটারপ্রম্নফ কাপড়ের ব্যাগ ছাড়া অন্য যেকোন উপাদান দিয়ে তৈরি ব্যাগ যাতে পানিতে না ভিজে, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। অনেক চেষ্টার পরেও যদি কোন ব্যাগ বৃষ্টির পানিতে ভিজেই যায় তাহলে ব্যাগের ধরন বুঝে নিতে হবে তার যত্ন। যদি পাটের ব্যাগ হয় তাহলে এমন জায়গায় রেখে শুকাতে হবে, যেখানে বাতাস লাগে কিন্তু সরাসরি রোদ পড়ে না।


কড়া রোদে রেখে দিলে পাটের কাপড় নষ্ট হয়, রঙ জ্বলে যায়। এমনিতে পাটজাত পণ্য মজবুত, টেকসই এবং ১০০% পরিবেশ বান্ধব হয় ফলে পাটের কাপড় প্রাকৃতিকভাবে ময়লা প্রতিরোধী। তাই বাইরে থেকে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।

 

ভিতরের লাইনার নিয়মিত পরিষ্কার করার জন্য একটি ভেজা কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে। বাইরের অংশে ময়লা, দাগ, ইত্যাদি পরিষ্কারের ড়্গেত্রে ঠান্ডা পানিতে অল্প পরিমাণ সাবান গুলিয়ে তাতে নরম কাপড় ভিজিয়ে দাগের উপর আসেত্ম আসেত্ম ঘষে তুলে ফেলুন।


তবে সম্পূর্ণ ব্যাগটিকে সরাসরি পানিতে ভেজানো যাবে না। তবে কেউ চাইলে  প্রিয় ব্যাগটি ড্রাই ক্লিনিং সার্ভিসে ড্রাই ক্লিন করাতে পারেন।
 


চামড়ার ব্যাগের প্রতিষ্ঠান গুটিপার সেলস এন্ড অপারেশন ম্যানেজার,  সাইব ইবনে আনোয়ার বলেন, বৃষ্টিতে বা যেকোন ভাবেই হোক চামড়ার ব্যাগ পানিতে ভিজলে গন্ধ হয়ে যায়, এছাড়া ফাঙ্গাসও পড়তে পারে, তাই নিতে হবে বিশেষ যত্ন। যদি বৃষ্টিতে পছন্দের চামড়ার ব্যাগটি ভিজেই যায়, তাহলে কড়া রোদে বা ড্রায়ার দিয়ে শুকানো যাবে না। বাইরে থেকে তাপ দিলে চামড়ার নিজস্ব তেলের লেয়ার শুকাতে আরম্ভ করবে, ফলে ব্যাগ শক্ত হয়ে যাবে। বাইরের লেয়ারে ফাটলও দেখা দিতে পারে। এজন্য সারা রাত ফ্যানের নিচে রেখে শুকিয়ে ফেলার  চেষ্টা করতে হবে। ব্যাগটি শুকিয়ে ফেলার জন্য খবরের কাগজ বা টিস্যু পেপার ব্যাগের মধ্যে রেখে দেয়া যেতে পারে, এতেও ভেজা ভাব কমে আসবে। খবরের কাগজ অথবা টিস্যু পেপার দিয়ে শুকিয়ে নেওয়ার পরে সামান্য ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে দিলে ব্যাগের মধ্যকার সব আর্দ্রতা চলে যাবে। ব্যাগ রাখার জায়গাটা যদি কাঠের তৈরি হয় তাহলে কিন্তু বৃষ্টির দিনে ফাঙ্গাস বা পোকামাকড়ের আক্রমণ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আজকাল বাজারে নানা ধরনের পস্নাস্টিক জাতীয় ব্যাগ স্টোরেজ পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। বদ্ধ জায়গায় চামড়ার ব্যাগ রাখলে তা ফেটে যায়। একান্ত্মই যদি রাখতে হয় তাহলে ব্যাগগুলোকে সুতি কাপড়ে মুড়িয়ে স্টোর করুন।

বর্ষাকালীন সময়ে চামড়ার ব্যাগ ব্যবহার না করে প্যারাস্যুট-জাতীয় কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করলে বিড়ম্বনা কম হবে। এছাড়া র‍্যাক্সিনের ব্যাগ ব্যবহার বেশ সুবিধাজনকও। বৃষ্টিওত ভিজলেও শুকানো নিয়ে কোন ঝামেলা নেই। অন্যদিকে ভারী সুতি কাপড়ের ব্যাগও এই সময়ের জন্য ভালো নয়, শুকাতে বেশ সময় লাগে। আবার ভালোভাবে না শুকালে স্যাঁতসেঁতে গন্ধ হতে পারে কালো কালো দাগ পড়ে যেতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর